শুক্রবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। চার্টে যা দেখা যাচ্ছে যে এটি ব্রিটিশ মুদ্রার জন্য তুলনামূলকভাবে আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি। উল্লেখযোগ্য যে, অস্থিরতার মাত্রার কারণে পাউন্ডের দরপতন তীব্রতা ইউরোর তুলনায় কম। গত দুই মাসে, ইউরোর মূল্য ৭০০–৮০০ পিপস হ্রাস পেয়েছে, যখন পাউন্ডের মূল্য ৮০০–৯০০ পিপস কমেছে। তবে সাধারণত, পাউন্ডের মূল্যের অস্থিরতা ইউরোর চেয়ে প্রায় ১.৫ গুণ বেশি। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, এই সময়ের মধ্যে পাউন্ডের মূল্য ১,১০০–১,২০০ পিপস পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারত।
যাইহোক, মার্কিন ডলারের বিপরীতে দরপতনের ক্ষেত্রে পাউন্ড তুলনামূলকভাবে বেশি প্রতিরোধ দেখাচ্ছে। এই প্রতিরোধের পেছনে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (BoE) আর্থিক নীতিমালা আংশিকভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, যা পাউন্ডের দরপতন কিছুটা ধীর করছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড মূল সুদের হার কমাতে তাড়াহুড়া করছে না। তবে এটি প্রায় নিশ্চিত যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ভবিষ্যতে সুদের হার কমানো অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি গত দুই বছর ধরে স্থবির অবস্থায় রয়েছে, যেখানে উচ্চ সুদের হার বজায় রাখা টেকসই কোন পদক্ষেপ নয়। সুতরাং, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সুদের হার কমানো প্রয়োজন। এর মধ্যে মার্কেটের ট্রেডাররা গত দুই বছর ধরে কেবল ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর বিষয়টি মূল্যায়ন করে এসেছে। ফলে, পাউন্ডের আরও উল্লেখযোগ্য দরপতনের সুযোগ রয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্যের ক্যালেন্ডারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা বক্তব্য প্রদান অনুষ্ঠান নেই। তবে এর অর্থ এই নয় যে পাউন্ডের দরপতন থেমে যাবে। গত সপ্তাহ জুড়ে পাউন্ডের দরপতনের জন্য খুব বেশি কারণ ছিল না, তবুও সামষ্টিক বা মৌলিক পটভূমির কোন প্রভাব না থাকা সত্তেও পাউন্ডের মূল্য ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে PCE প্রাইস ইনডেক্স, তৃতীয় প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান, এবং ডিউরেবল গুডস অর্ডার্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে এগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন নয়। সাধারণত, মার্কেটের ট্রেডাররা জিডিপি প্রতিবেদনের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে না। যদিও ফেডের জন্য PCE ইনডেক্স গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটির ফলাফল পূর্বাভাসের থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন না হলে মার্কেটে কম প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। এদিকে, ডিউরেবল গুডস অর্ডার্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল আকর্ষণীয় হলেও এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।
বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি বৈশ্বিক কারণ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, এবং সাধারণভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক বা মৌলিক পটভূমি এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে সক্ষম নয়। গত দুই মাসে, ফেডের আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণের মধ্যেও ডলারের মূল্য বেড়েছে—যা একটি পরস্পরবিরোধী ঘটনা। তবে আমরা আগেও ব্যাখ্যা করেছি যে, ফেডের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় দুই বছর ধরে ডলারের হ্রাস পেয়েছিল। সুতরাং, নীতিমালার নমনীয়করণের প্রভাবে বেশিরভাগ অংশ ইতোমধ্যেই মূল্যায়িত হয়েছে, এবং মার্কেটে এখন ডলারের ন্যায্য মূল্যের সমন্বয় করা হচ্ছে এবং পূর্বে উপেক্ষিত বিষয়গুলো আমলে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ, ব্রিটিশ অর্থনীতির দুর্বলতা, এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন। সুতরাং, আমরা মনে করি উল্লেখযোগ্য বাধা ছাড়াই পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে।
গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে 86 পিপস, যা "মাঝারি" হিসেবে বিবেচনা করা যায়। সোমবার, ২৫ নভেম্বর, আমরা আশা করছি যে এই পেয়ারের মূল্য 1.2444 এবং 1.2616 লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল নিম্নমুখী, যা স্থায়ীভাবে এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা নির্দেশ করে। CCI সূচকটি একাধিক বুলিশ ডাইভারজেন্স তৈরি করেছে এবং কয়েকবার ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, তবে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশনের সম্ভাবনা এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
- R1: 1.2573
- R2: 1.2695
- R3: 1.2817
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
GBP/USD পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা বজায় রয়েছে। আমরা এখনও মনে করছি যে লং পজিশন থেকে খুব বেশি লাভের সম্ভাবনা নেই, কারণ আমরা মনে করি পাউন্ডের দর বৃদ্ধির সম্ভাব্য সমস্ত কারণ ইতোমধ্যে একাধিকবার মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করেছে। যারা "শুধুমাত্র টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের" ভিত্তিতে ট্রেড করেন, তারা লং পজিশন ওপেন করতে পারেন, তবে সেসময় এই পেয়ারের মূল্যকে মুভিং অ্যাভারেজের উপরে থাকতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.2817 এবং 1.2878। তবে, শর্ট পজিশন আরও বেশি লাভজনক হতে পারে, এবং মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের নিচে থাকতে হবে, এক্ষেত্রে মূল্যের লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.2451 এর লেভেল।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।